কলার উপকারিতা কি আদৌ আছে? অথচ গ্রাম বাংলার সব থেকে সহজলভ্য খাবার গুলোর মধ্যে নাকি কলা অন্যতম। সহজলভ্য হলে কি হবে? এর উপকারিতা সত্যিই অনেক ব্যাপক! কলায় ভিটামিন বি-৬ ছাড়াও ভিটামিন সি, ডাইয়াটারি ফাইবার এবং ম্যাংগানিজ প্রচুর পরিমাণে থাকে। এছাড়া চর্বি ও কোলেস্টেরল মুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে কলা অন্যতম। তো আজকে জেনে নেয়া যাক কলার ৮ উপকারিতা!
শক্তির উৎস হিসেবে কলার ভূমিকা
কলায় প্রচুর পরিমাণে গ্লকোজ, সুক্রোজ এবং ফ্রুক্টোজ বিদ্যমান। যেগুলো শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। তাই খেলোয়াড়দেরকে কলা বেশী বেশী খেতে পরামর্শ দেয়া হয়। বিশেষ করে খেলা শুরুর আগে এবং পড়ে কলা খেতে বলা হয়। একই কারণে বাচ্চাদেরও কলা বেশী বেশী খেতে বলা হয়।
হৃদপিণ্ড এবং রক্তচাপে কলার ভূমিকা
একটি মাঝারি সাইজের কলায় ৩২০-৪০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে, যেটা একজনের দৈনিক চাহিদার ১০% পূরণ করে। পটাশিয়াম হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। অন্যদিকে কলায় সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। এই কম সোডিয়াম এবং বেশী পটাশিয়াম, দুইএ মিলে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে জোরালো ভূমিকা পালন করে।
ত্বকের সুরক্ষায় কলার ভূমিকা
কলায় বিদ্যমান ম্যাংগানিজ ত্বকের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি মাঝারি সাইজের কলায় যে পরিমাণ ম্যাংগানিজ থাকে তা থেকে একটি মানুষের এক দিনের মাঙ্গানিজের চাহিদার ১৩% পূরণ হয়ে থাকে। ম্যাংগানিজ শরীরে কোলাজেন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং ত্বককে ফ্রি র্যাডিকাল ড্যামেজ হওয়া থেকে সুরুক্ষা দেয়।
কিডনি রোগে কলার ভূমিকা
কলায় বিদ্যমান পটশিয়াম রক্ত চাপ এবং কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণে জোরালো ভূমিকা পালন করে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যারা সপ্তাহে অন্তত ২-৩ টা কলা খায় তাদের কিডনি রোগ হবার সম্ভাবনা ৩৩% কমে যায়। আরেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা সপ্তাহে অন্তত ৪-৬ টা কলা খায় তাদের কিডনি রোগ হবার সম্ভাবনা ৫০% কমে যায়!
হজমে কলার ভূমিকা
কলার ইনসলুবল ফাইবার (অদ্রবণীয় তন্তু) মানব মল’কে নরম করতে সহায়তা করে যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য হলে বেশী বেশী কলা খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়া আলসার, বুক জ্বালা পোড়া হলে কলা খেতে বলা হয়।
অ্যান্টি অক্সিডেন্টের আঁধার হিসেবে কলার ভূমিকা
কলায় বিদ্যমান উচ্চমাত্রার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হৃদপিণ্ডের রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন বি ৬ এর উৎস হিসেবে কলার ভূমিকা
ভিটামিন বি ৬ এর খুব সহজলভ্য উৎস হল এই কলা। একজন মানুষের দৈনিক চাহিদার এক তৃতিয়াংশ ভিটামিন বি ৬ মিটতে পারে একটি মাঝারি সাইজের কলার মাধ্যমে। শরীরে ভিটামিন বি ৬ এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে, তন্মদ্ধে কলা-
১) লোহিত রক্ত কণিকা বাড়াতে সহায়তা করে।
২) শর্করা এবং চর্বিকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করে।
৩) লিভার এবং কিডনি থেকে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করে।
৪) স্নায়ুবিক প্রণালিকে ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া অন্তসত্তা নারীর জন্য কলা অনেক উপকারী খাদ্য।
ভিটামিন সি এর উৎস হিসেবে কলার ভূমিকা
কলায় খুব বেশী পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া না গেলেও একজন মানুষের সারা দিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি এর ১০% একটি মাঝারি সাইজের কলা থেকে পাওয়া যেতে পারে। ভিটামিন সি মানব শরীরের কোষ গুলো ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করতে, কোলাজেন তৈরিতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।